মানবহত্যা ও সন্ত্রাসবাদ ইসলামের পথ নয়
আপডেট: ০০:০৯, জুলাই ১৫, ২০১৬
| প্রিন্ট সংস্করণ
|
ইসলামের
মূল কথা হলো তওহিদ বা একত্ববাদ; এর বিপরীত হলো শিরক বা অংশীবাদ, যা আল্লাহ
ক্ষমা করবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। শিরকের পরই সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ হলো
মানবহত্যা। এটি বান্দার হক হওয়ায় আল্লাহ মানবহত্যাকারীকে ক্ষমা করবেন না।
আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-এর দ্বিতীয় পুত্র কাবিল প্রথম আপন বড় ভাই হজরত হাবিল (রা.)-কে অন্যায়ভাবে হত্যা করেন। প্রসঙ্গটি কোরআন মজিদে এভাবে এসেছে—‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না। সে বলল, “আমি তোমাকে হত্যা করবই”। অপরজন বলল, “অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিদের কোরবানি কবুল করেন। আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি হাত তুললেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি হাত তুলব না; আমি তো জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং অগ্নিবাসী হও ইহাই আমি চাই এবং ইহা জালিমদের কর্মফল।” অতঃপর তার চিত্ত ভ্রাতৃহত্যায় তাকে উত্তেজিত করল। ফলে সে তাকে হত্যা করল; তাই সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা-৫ মায়িদাহ, আয়াত: ২৭-৩১)।
মানবহত্যা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এ কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল, আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। তাদের কাছে তো আমার রাসুলগণ স্পষ্ট প্রমাণ এনেছিলেন, কিন্তু এরপরও তাদের অনেকে দুনিয়ায় সীমা লঙ্ঘনকারীই রয়ে গেল।’
ইসলামের শিক্ষা হলো: সব মানুষ এক আল্লাহর বান্দা; যারা বিশ্বাসী তারা আল্লাহর অনুগত বান্দা। সব মানুষ একই বাবা-মায়ের সন্তান; সব মানুষ একই রক্তে-মাংসে গড়া; তাই সাদা-কালোতে কোনো প্রভেদ নেই। সব মানুষ আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত। কলেমা পড়া মুসলমান সবাই সমান; কবরে ও হাশরে সবাইকে একই প্রশ্ন করা হবে।
ইসলামে মানবহত্যার পরকালীন বিধান
মানবহত্যার পরকালীন বিধান সম্বন্ধে কোরআনে বলা হয়েছে: ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মোমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য মহা শাস্তি প্রস্তুত রাখবেন।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৯৩)। আরও সতর্ক করে বলা হয়েছে: ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা করবে না।’ (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৫১)। ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা কোরো না! কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে তো আমি উহা প্রতিকারের অধিকার দিয়েছি; কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; সে তো সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (সুরা-১৭ বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৩)।
ইসলামি শরিয়তের প্রধান উদ্দেশ্য ও
ইসলামের শিক্ষা
ইসলামি শরিয়তের প্রধান উদ্দেশ্য হলো: জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা, বংশ রক্ষা ও ধর্ম রক্ষা। এখানে প্রণিধানযোগ্য যে, শরিয়তের মূল পাঁচটি লক্ষ্যের প্রধান লক্ষ্য হলো জীবন রক্ষা। আজকাল অনেকেই সামান্য খুঁটিনাটি কারণে সন্ত্রাস, হত্যা, গুপ্তহত্যাসহ খুনখারাবি করতে দ্বিধাবোধ করে না। এটা ইসলামের শিক্ষা নয়; ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। কেউ যদি এমন কোনো অপরাধও করেন, যাতে তার প্রাণ নিধনের বিধান আছে; তবে তা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক বাস্তবায়ন করা ইসলামসম্মত নয়; বরং তা যথাযথ আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও কেবল বাস্তবায়নের এখতিয়ার রাখে। কারণ, কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিধিবিধান যা অন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত, অর্থাৎ ব্যক্তির একান্ত নিজের নয়; তথা সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তা কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায় কর্তৃক নিজেদের মতো করে বাস্তবায়ন করা শরিয়তসিদ্ধ নয়; এটি কেবল আদালত ও সরকারের দায়িত্ব।
ইসলাম ন্যায়পরায়নতা, সুবিচার ও সুন্দর আচরণ করার শিক্ষা দেয়। ইসলাম বিশ্বব্যাপী মানবভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে যুদ্ধ সংঘটনের কারণ দূর করতে চায়। ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানবভ্রাতৃত্বের নীতিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার মধ্যে সহযোগিতামূলক সুসম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হলে যুদ্ধের আশঙ্কা কমে যায়। মানবভ্রাতৃত্বের পাশাপাশি ইসলাম বিশ্বাসের ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়। হিজরতের সময় পথ দেখানোর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কার মুশরিক আবদুল্লাহ ইবনে আরিকতের সাহায্য নিয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইহুদিদের সাহায্যও নিয়েছেন, ছওয়ান ইবনে উমাইয়া মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী ও সমর্থক হয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) পরম শত্রুর সঙ্গেও ভালো আচরণ করেছেন। এ ছাড়া তিনি অমুসলিমদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলতেন। তিনি তাদের সঙ্গে লেনদেন করেছেন এবং শ্রমের বিনিময়ও করেছেন। পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করা ইসলামসমর্থিত নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন সে প্রস্থান করে, তখন সে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু নিপাতের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২০৫)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় ঘটিয়ো না, তাঁকে ভয় ও আশার সহিত ডাকবে। নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৬)। ইমাম ইবনে কাসির (রা.) বলেন, যেসব কর্মকাণ্ড পৃথিবীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। কোরআন করিমে রয়েছে, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি কোরো না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১১)।
ইসলাম সর্বোচ্চ নৈতিকতা, উন্নত মূল্যবোধ, চরম ধৈর্য ও পরম সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়। ইসলাম অতর্কিতভাবে কারও ওপর আক্রমণ চালানোর অনুমতি দেয় না।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।
smusmangonee@gmail.com
https://web.facebook.com/yousuf7181/
আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-এর দ্বিতীয় পুত্র কাবিল প্রথম আপন বড় ভাই হজরত হাবিল (রা.)-কে অন্যায়ভাবে হত্যা করেন। প্রসঙ্গটি কোরআন মজিদে এভাবে এসেছে—‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না। সে বলল, “আমি তোমাকে হত্যা করবই”। অপরজন বলল, “অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিদের কোরবানি কবুল করেন। আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি হাত তুললেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি হাত তুলব না; আমি তো জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং অগ্নিবাসী হও ইহাই আমি চাই এবং ইহা জালিমদের কর্মফল।” অতঃপর তার চিত্ত ভ্রাতৃহত্যায় তাকে উত্তেজিত করল। ফলে সে তাকে হত্যা করল; তাই সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা-৫ মায়িদাহ, আয়াত: ২৭-৩১)।
মানবহত্যা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এ কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল, আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। তাদের কাছে তো আমার রাসুলগণ স্পষ্ট প্রমাণ এনেছিলেন, কিন্তু এরপরও তাদের অনেকে দুনিয়ায় সীমা লঙ্ঘনকারীই রয়ে গেল।’
ইসলামের শিক্ষা হলো: সব মানুষ এক আল্লাহর বান্দা; যারা বিশ্বাসী তারা আল্লাহর অনুগত বান্দা। সব মানুষ একই বাবা-মায়ের সন্তান; সব মানুষ একই রক্তে-মাংসে গড়া; তাই সাদা-কালোতে কোনো প্রভেদ নেই। সব মানুষ আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত। কলেমা পড়া মুসলমান সবাই সমান; কবরে ও হাশরে সবাইকে একই প্রশ্ন করা হবে।
ইসলামে মানবহত্যার পরকালীন বিধান
মানবহত্যার পরকালীন বিধান সম্বন্ধে কোরআনে বলা হয়েছে: ‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মোমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য মহা শাস্তি প্রস্তুত রাখবেন।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৯৩)। আরও সতর্ক করে বলা হয়েছে: ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা করবে না।’ (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৫১)। ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা কোরো না! কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে তো আমি উহা প্রতিকারের অধিকার দিয়েছি; কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; সে তো সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (সুরা-১৭ বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৩)।
ইসলামি শরিয়তের প্রধান উদ্দেশ্য ও
ইসলামের শিক্ষা
ইসলামি শরিয়তের প্রধান উদ্দেশ্য হলো: জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা, বংশ রক্ষা ও ধর্ম রক্ষা। এখানে প্রণিধানযোগ্য যে, শরিয়তের মূল পাঁচটি লক্ষ্যের প্রধান লক্ষ্য হলো জীবন রক্ষা। আজকাল অনেকেই সামান্য খুঁটিনাটি কারণে সন্ত্রাস, হত্যা, গুপ্তহত্যাসহ খুনখারাবি করতে দ্বিধাবোধ করে না। এটা ইসলামের শিক্ষা নয়; ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। কেউ যদি এমন কোনো অপরাধও করেন, যাতে তার প্রাণ নিধনের বিধান আছে; তবে তা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক বাস্তবায়ন করা ইসলামসম্মত নয়; বরং তা যথাযথ আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও কেবল বাস্তবায়নের এখতিয়ার রাখে। কারণ, কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিধিবিধান যা অন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত, অর্থাৎ ব্যক্তির একান্ত নিজের নয়; তথা সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তা কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায় কর্তৃক নিজেদের মতো করে বাস্তবায়ন করা শরিয়তসিদ্ধ নয়; এটি কেবল আদালত ও সরকারের দায়িত্ব।
ইসলাম ন্যায়পরায়নতা, সুবিচার ও সুন্দর আচরণ করার শিক্ষা দেয়। ইসলাম বিশ্বব্যাপী মানবভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে যুদ্ধ সংঘটনের কারণ দূর করতে চায়। ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানবভ্রাতৃত্বের নীতিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার মধ্যে সহযোগিতামূলক সুসম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হলে যুদ্ধের আশঙ্কা কমে যায়। মানবভ্রাতৃত্বের পাশাপাশি ইসলাম বিশ্বাসের ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়। হিজরতের সময় পথ দেখানোর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কার মুশরিক আবদুল্লাহ ইবনে আরিকতের সাহায্য নিয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইহুদিদের সাহায্যও নিয়েছেন, ছওয়ান ইবনে উমাইয়া মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী ও সমর্থক হয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) পরম শত্রুর সঙ্গেও ভালো আচরণ করেছেন। এ ছাড়া তিনি অমুসলিমদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলতেন। তিনি তাদের সঙ্গে লেনদেন করেছেন এবং শ্রমের বিনিময়ও করেছেন। পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করা ইসলামসমর্থিত নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন সে প্রস্থান করে, তখন সে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু নিপাতের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২০৫)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় ঘটিয়ো না, তাঁকে ভয় ও আশার সহিত ডাকবে। নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৬)। ইমাম ইবনে কাসির (রা.) বলেন, যেসব কর্মকাণ্ড পৃথিবীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। কোরআন করিমে রয়েছে, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি কোরো না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১১)।
ইসলাম সর্বোচ্চ নৈতিকতা, উন্নত মূল্যবোধ, চরম ধৈর্য ও পরম সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়। ইসলাম অতর্কিতভাবে কারও ওপর আক্রমণ চালানোর অনুমতি দেয় না।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।
smusmangonee@gmail.com
https://web.facebook.com/yousuf7181/
No comments:
Post a Comment