আপডেট: ০১:৩০, আগস্ট ২৯, ২০১৬
| প্রিন্ট সংস্করণ
|
যুক্তরাষ্ট্রের
আটলান্টায় গত জুনে গোটা বিশ্ব থেকে নতুন সব উদ্ভাবন নিয়ে কম্পিউটার
বিজ্ঞানীরা এককাট্টা হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দুই বাংলাদেশি কম্পিউটার
বিজ্ঞানী। ‘আইইইই কম্পস্যাক ২০১৬’ নামের সেই সম্মেলনে তাঁরা দুজন এক
জ্যাকেট উপস্থাপন করেন, যা দিয়ে স্মার্ট যন্ত্রগুলোর কাজ সারা যাবে।
ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংটনের কম্পিউটার ও তথ্যবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক রাগিব হাসানের তত্ত্বাবধানে ২০১২ সালে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন রাসিব খান। তাঁরা দুজনে মিলে কাজ শুরু করেন পরিধেয় প্রযুক্তি ক্লাউড জ্যাকেট নিয়ে। গবেষণা শেষে আইইইই কম্পস্যাক সম্মেলনের ৪০তম আসরে তাঁদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁরা। সম্প্রতি পিএইচডি শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান কেনটাকি ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন রাসিব খান।
রাগিব হাসানের সঙ্গে ই-মেইল ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ক্লাউড জ্যাকেটের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল। তিনি বললেন, ‘বর্তমানে আপনি যদি স্মার্টফোন, স্মার্টঘড়ি, স্মার্ট চশমা কিংবা স্পোর্টস ট্র্যাকার ব্যবহার করতে চান তবে আপনাকে আলাদাভাবে কিনতে হবে সব। তার চেয়ে বরং এমন কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে, যা একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল এবং পরিধেয় প্রযুক্তি সমর্থন করে। তখন এসব কিছুই স্বল্প খরচে পাওয়া সম্ভব।’
দিন যত গড়াচ্ছে, স্মার্টফোনে কাজের ধরন ততই জটিল হচ্ছে। বেশি শক্তির প্রসেসরের দরকার পড়ছে, র্যা ম বেশি লাগছে, অল্প মেমোরিতে এখন আর কাজ চলছে না। ফলে পুরোনো যন্ত্র এখন আর নতুন কাজের জন্য উপযুক্ত না। রাগিব হাসান ও রাসিব খান তাই স্মার্ট যন্ত্রের ‘স্মার্টনেস’ কমিয়ে বরং একক কোনো প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন। যার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী সফটওয়্যার তৈরি করবেন প্রোগ্রামাররা। উদাহরণটা এভাবে দেওয়া যেতে পারে, আইওএস নাকি অ্যান্ড্রয়েডচালিত স্মার্টফোন কিনবে, সে সিদ্ধান্তের চেয়ে বরং ক্লাউড কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম বদলে দিলেই পর্দায় সে কাজ সারা যাবে।
ক্লাউড জ্যাকেটের মূল অংশ দুটি—ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ক্লাউড কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ ও প্রক্রিয়াকরণ শেষে উপস্থাপনের জন্য টাচ স্ক্রিন। নমুনা তৈরিতে রাগিব হাসান ও রাসিব খান পুরোনো এক জ্যাকেটের সঙ্গে ১০টি ক্রেডিট কার্ড আকারের র্যা স্পবেরি পাই কম্পিউটার, একটি স্পর্শকাতর পর্দা এবং বিদ্যুতের উৎস হিসেবে তিনটি পাওয়ার ব্যাংক যোগ করেছেন।
ক্লাউড জ্যাকেটের র্যা স্পবেরি পাই কম্পিউটারগুলো ক্লাউড কম্পিউটার হিসেবে কাজ করবে। যে কাজ করতে হবে কিংবা মেমোরিতে যা সংরক্ষণ করা দরকার তা এই ক্লাউড কম্পিউটারে করা হবে। তারহীন ওয়াই–ফাই বা ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত পর্দা থেকে ক্লাউড কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কম্পিউটারগুলো একটি অন্যটির সঙ্গে যুক্ত হতে প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে, পাবলিক নেটওয়ার্ক না। ফলে হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা কম।
রাসিব খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যে ক্লাউড কম্পিউটার আমরা সাধারণত ব্যবহার করি, আমাদের ক্লাউড জ্যাকেটের ধারণা অনেকটা তেমনই। আমাদের শুধু পাবলিক নেটওয়ার্কে যেতে হচ্ছে না।’
রাসিব খানের মতে, বর্তমানের স্মার্ট যন্ত্রগুলোর স্থান নেবে না ক্লাউড জ্যাকেট। বরং অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনবে। নতুন নতুন কাজের জন্য স্মার্ট যন্ত্রের হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তার ধারণা থেকে বের হয়ে বরং একই স্মার্টফোন ক্লাউড জ্যাকেটের প্রসেসিং ক্ষমতা এবং মেমোরি ব্যবহার করে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তি দরকার পড়ে এমন অ্যাপ চালাতে পারবে। কারণ স্মার্টফোন বড়জোর এক থেকে চার গিগাবাইটের র্যা মে সীমাবদ্ধ থাকছে। এদিকে তাঁদের তৈরি নমুণা জ্যাকেটে সব মিলিয়ে অন্তত ১০ গিগাবাইট র্যা ম আছে। স্টোরেজ ও প্রসেসরও বেশি।
হাইপার ক্লাউড
একজনের ক্লাউড জ্যাকেট যেখানে স্মার্টফোনের তুলনায় অনেক শক্তিশালী, সেখানে কয়েকজন যদি একই ধরনের জ্যাকেট পরে কাজ করেন তবে তৈরি হবে ‘হাইপারক্লাউড’। সাধারণ একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। মনে করুন, মাঠে কোনো ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। দর্শক সারির অনেকেই তাদের সাধারণ মানের স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করলেন। সবার সেই ভিডিও যদি এক করে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তবে তবে ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও তৈরি সম্ভব। অথচ শক্তিশালী কিংবা দামি যন্ত্রের প্রয়োজন হচ্ছে না। তেমনই কোনো একক শক্তিশালী কম্পিউটারে কাজ না সেরে, বরং একাধিক ছোট ছোট কম্পিউটারের প্রসেসরের শক্তি এক করে বড় কাজ করা সম্ভব। হাইপারক্লাউডের ধারণা ঠিক তেমনই। মনে করুন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকাজে সবার কাছে একই ধরনের তথ্য নাও থাকতে পারে। হয়তো একই ভবনের বিভিন্ন তলায় এবং ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন উদ্ধারকর্মী কাজে ব্যস্ত আছেন। তাঁদের সবার কাছে যদি একেকটি ক্লাউড জ্যাকেট থাকে তবে প্রত্যেকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় কোনো সিস্টেমের মাধ্যমে সবার তথ্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। আবার সবার ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করা ভিডিও নিয়ে জায়গাটির ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা সম্ভব, যা উদ্ধারকাজে সাহায্য করবে।
তবে ক্লাউড জ্যাকেটের ধারণা একক কোনো কাজে সীমাবদ্ধ না রেখে নানারকম কাজে ব্যবহার করতে চান রাগিব ও রাসিব। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের কথা ভাবছেন রাগিব হাসান।
রাগিব হাসানের বাড়ি জামালপুরে হলেও চট্টগ্রামে বেড়ে উঠেছেন। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে প্রথম স্থান অধিকার করায় পেয়েছিলেন বুয়েটের চ্যান্সেলর পুরস্কার এবং সিএসই বিভাগের স্বর্ণপদক। এরপর বুয়েটে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শেষ করেন। অনলাইনে শেখার ওয়েবসাইট শিক্ষক ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তাঁর উদ্যোগেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল প্রকল্পে কাজ করেন এক ঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক। মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার একজন ব্যুরোক্র্যাট তিনি।
২০০৮ সালে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে স্নাতক করেন রাসিব খান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরাসমুস মুন্ডুস বৃত্তি পেয়ে ২০০৯ সালে একই সঙ্গে সুইডেনের স্টকহোমের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (কেটিএইচ) এবং ফিনল্যান্ডের হেলসিংকির আলটো ইউনিভার্সিটি থেকে নিরাপত্তা এবং মোবাইল কম্পিউটিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর কিছুদিনের জন্য এরিকসন রিসার্চ এবং হেলসিংকি ইনস্টিটিউট ফর আইটিতে কাজ করেন। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আলাবামাতে রাগিব হাসানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন। সেখানেই দুজনের পরিচয় এবং দুজনে একসঙ্গে এই ক্লাউড জ্যাকেট নিয়ে কাজ শুরু করেন। রাসিব খান বলেন, ‘আমি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে যখন দেখা হয় তখন তাঁদের কাছ থেকে কাজের অনুপ্রেরণা পাই। একজন বাংলাদেশি হিসেবে সারা জীবন বিজ্ঞানে অবদান রেখে যেতে চাই।’
www.facebook.com/yousuf7181
ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংটনের কম্পিউটার ও তথ্যবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক রাগিব হাসানের তত্ত্বাবধানে ২০১২ সালে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন রাসিব খান। তাঁরা দুজনে মিলে কাজ শুরু করেন পরিধেয় প্রযুক্তি ক্লাউড জ্যাকেট নিয়ে। গবেষণা শেষে আইইইই কম্পস্যাক সম্মেলনের ৪০তম আসরে তাঁদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁরা। সম্প্রতি পিএইচডি শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান কেনটাকি ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন রাসিব খান।
রাগিব হাসানের সঙ্গে ই-মেইল ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ক্লাউড জ্যাকেটের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল। তিনি বললেন, ‘বর্তমানে আপনি যদি স্মার্টফোন, স্মার্টঘড়ি, স্মার্ট চশমা কিংবা স্পোর্টস ট্র্যাকার ব্যবহার করতে চান তবে আপনাকে আলাদাভাবে কিনতে হবে সব। তার চেয়ে বরং এমন কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে, যা একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল এবং পরিধেয় প্রযুক্তি সমর্থন করে। তখন এসব কিছুই স্বল্প খরচে পাওয়া সম্ভব।’
দিন যত গড়াচ্ছে, স্মার্টফোনে কাজের ধরন ততই জটিল হচ্ছে। বেশি শক্তির প্রসেসরের দরকার পড়ছে, র্যা ম বেশি লাগছে, অল্প মেমোরিতে এখন আর কাজ চলছে না। ফলে পুরোনো যন্ত্র এখন আর নতুন কাজের জন্য উপযুক্ত না। রাগিব হাসান ও রাসিব খান তাই স্মার্ট যন্ত্রের ‘স্মার্টনেস’ কমিয়ে বরং একক কোনো প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছেন। যার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী সফটওয়্যার তৈরি করবেন প্রোগ্রামাররা। উদাহরণটা এভাবে দেওয়া যেতে পারে, আইওএস নাকি অ্যান্ড্রয়েডচালিত স্মার্টফোন কিনবে, সে সিদ্ধান্তের চেয়ে বরং ক্লাউড কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম বদলে দিলেই পর্দায় সে কাজ সারা যাবে।
ক্লাউড জ্যাকেটের মূল অংশ দুটি—ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ক্লাউড কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ ও প্রক্রিয়াকরণ শেষে উপস্থাপনের জন্য টাচ স্ক্রিন। নমুনা তৈরিতে রাগিব হাসান ও রাসিব খান পুরোনো এক জ্যাকেটের সঙ্গে ১০টি ক্রেডিট কার্ড আকারের র্যা স্পবেরি পাই কম্পিউটার, একটি স্পর্শকাতর পর্দা এবং বিদ্যুতের উৎস হিসেবে তিনটি পাওয়ার ব্যাংক যোগ করেছেন।
ক্লাউড জ্যাকেটের র্যা স্পবেরি পাই কম্পিউটারগুলো ক্লাউড কম্পিউটার হিসেবে কাজ করবে। যে কাজ করতে হবে কিংবা মেমোরিতে যা সংরক্ষণ করা দরকার তা এই ক্লাউড কম্পিউটারে করা হবে। তারহীন ওয়াই–ফাই বা ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত পর্দা থেকে ক্লাউড কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কম্পিউটারগুলো একটি অন্যটির সঙ্গে যুক্ত হতে প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে, পাবলিক নেটওয়ার্ক না। ফলে হ্যাক হওয়ার আশঙ্কা কম।
রাসিব খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যে ক্লাউড কম্পিউটার আমরা সাধারণত ব্যবহার করি, আমাদের ক্লাউড জ্যাকেটের ধারণা অনেকটা তেমনই। আমাদের শুধু পাবলিক নেটওয়ার্কে যেতে হচ্ছে না।’
রাসিব খানের মতে, বর্তমানের স্মার্ট যন্ত্রগুলোর স্থান নেবে না ক্লাউড জ্যাকেট। বরং অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনবে। নতুন নতুন কাজের জন্য স্মার্ট যন্ত্রের হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তার ধারণা থেকে বের হয়ে বরং একই স্মার্টফোন ক্লাউড জ্যাকেটের প্রসেসিং ক্ষমতা এবং মেমোরি ব্যবহার করে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তি দরকার পড়ে এমন অ্যাপ চালাতে পারবে। কারণ স্মার্টফোন বড়জোর এক থেকে চার গিগাবাইটের র্যা মে সীমাবদ্ধ থাকছে। এদিকে তাঁদের তৈরি নমুণা জ্যাকেটে সব মিলিয়ে অন্তত ১০ গিগাবাইট র্যা ম আছে। স্টোরেজ ও প্রসেসরও বেশি।
হাইপার ক্লাউড
একজনের ক্লাউড জ্যাকেট যেখানে স্মার্টফোনের তুলনায় অনেক শক্তিশালী, সেখানে কয়েকজন যদি একই ধরনের জ্যাকেট পরে কাজ করেন তবে তৈরি হবে ‘হাইপারক্লাউড’। সাধারণ একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। মনে করুন, মাঠে কোনো ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। দর্শক সারির অনেকেই তাদের সাধারণ মানের স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করলেন। সবার সেই ভিডিও যদি এক করে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তবে তবে ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও তৈরি সম্ভব। অথচ শক্তিশালী কিংবা দামি যন্ত্রের প্রয়োজন হচ্ছে না। তেমনই কোনো একক শক্তিশালী কম্পিউটারে কাজ না সেরে, বরং একাধিক ছোট ছোট কম্পিউটারের প্রসেসরের শক্তি এক করে বড় কাজ করা সম্ভব। হাইপারক্লাউডের ধারণা ঠিক তেমনই। মনে করুন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকাজে সবার কাছে একই ধরনের তথ্য নাও থাকতে পারে। হয়তো একই ভবনের বিভিন্ন তলায় এবং ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন উদ্ধারকর্মী কাজে ব্যস্ত আছেন। তাঁদের সবার কাছে যদি একেকটি ক্লাউড জ্যাকেট থাকে তবে প্রত্যেকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় কোনো সিস্টেমের মাধ্যমে সবার তথ্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। আবার সবার ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করা ভিডিও নিয়ে জায়গাটির ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা সম্ভব, যা উদ্ধারকাজে সাহায্য করবে।
তবে ক্লাউড জ্যাকেটের ধারণা একক কোনো কাজে সীমাবদ্ধ না রেখে নানারকম কাজে ব্যবহার করতে চান রাগিব ও রাসিব। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের কথা ভাবছেন রাগিব হাসান।
রাগিব হাসানের বাড়ি জামালপুরে হলেও চট্টগ্রামে বেড়ে উঠেছেন। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে প্রথম স্থান অধিকার করায় পেয়েছিলেন বুয়েটের চ্যান্সেলর পুরস্কার এবং সিএসই বিভাগের স্বর্ণপদক। এরপর বুয়েটে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শেষ করেন। অনলাইনে শেখার ওয়েবসাইট শিক্ষক ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তাঁর উদ্যোগেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল প্রকল্পে কাজ করেন এক ঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক। মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার একজন ব্যুরোক্র্যাট তিনি।
২০০৮ সালে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে স্নাতক করেন রাসিব খান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরাসমুস মুন্ডুস বৃত্তি পেয়ে ২০০৯ সালে একই সঙ্গে সুইডেনের স্টকহোমের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (কেটিএইচ) এবং ফিনল্যান্ডের হেলসিংকির আলটো ইউনিভার্সিটি থেকে নিরাপত্তা এবং মোবাইল কম্পিউটিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর কিছুদিনের জন্য এরিকসন রিসার্চ এবং হেলসিংকি ইনস্টিটিউট ফর আইটিতে কাজ করেন। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আলাবামাতে রাগিব হাসানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন। সেখানেই দুজনের পরিচয় এবং দুজনে একসঙ্গে এই ক্লাউড জ্যাকেট নিয়ে কাজ শুরু করেন। রাসিব খান বলেন, ‘আমি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে যখন দেখা হয় তখন তাঁদের কাছ থেকে কাজের অনুপ্রেরণা পাই। একজন বাংলাদেশি হিসেবে সারা জীবন বিজ্ঞানে অবদান রেখে যেতে চাই।’
www.facebook.com/yousuf7181
No comments:
Post a Comment